বাড়ি থেকে পালিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন এক তরুণ ও এক তরুণী। পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নিয়ে মেয়েটিকে অন্য একজনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পর তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই তরুণ-তরুণী মারা গেলে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোতাশি হরি বটতলা এলাকায় রেললাইন থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয় বলে রাজবাড়ি রেলওয়ে থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন। নিহতরা হলেন ফারহানা আক্তার মুক্তা (১৯) এবং ফজলুর রহমান (২০)। ফারহানা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের চরনারানদিয়া গ্রামের আলি আকবরের মেয়ে। অন্যদিকে ফজলুরের বাড়ি বহুদূরে লালমনিরহাট জেলায়। তিনি ওই জেলার আদিতমারী উপজেলার সততিবাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। তিনি আদিতমারী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা লোকাল ট্রেন ভাটিয়াপাড়া এক্সপ্রেস সোতাশি হরিবটতলা পৌঁছালে ফারহানা ও ফজলুর একই সঙ্গে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা সেখানে যায়। ফায়ার সার্ভিসের বোয়ালমারী স্টেশন ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) ওয়াহিদুজ্জামান খান সাইফুল জানান, ফারহানার লাশ পান তারা। ফজলুরের দেহ খণ্ডিত হলেও প্রাণ ছিল। তবে বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ দুটি পরে রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ফায়ার সার্ভিস। রেল পুলিশের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আর লাশ দুটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। ফেইসবুকের মাধ্যমে ফারহানা ও ফজলুরের পরিচয় এবং তা থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে তাদের স্বজনদের ধারণা। ফজলুরের মা হাসি বেগমকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার ছেলে ফেইসবুকে একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলতেন। তিনি জানান, গত রোববার তার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল বেড়ানোর কথা বলে, তবে বিস্তারিত কিছু তিনি জানেন না। এদিকে ফারহানার পরিবার তার অমতে রোজার ঈদের আগে তার সঙ্গে মাগুরার এক ব্যক্তির বিয়ে দিয়েছিল। তবে বাবার বাড়িতেই থাকছিলেন এই তরুণী। ফারহানার চাচা হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী জানুয়ারিতে তাকে (ফারহানাকে) স্বামীর বাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই এই ঘটনা ঘটে গেল।”
Leave a Reply