নতুন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, যুদ্ধবিমান, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী সাবমেরিন যুক্ত করে নৌবাহিনীর শক্তিমত্তা বাড়িয়েই চলেছে চীন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের বিশ্লেষণ, সক্ষমতায় এরই মধ্যে মার্কিন নৌবাহিনীকে ছাড়িছে চীন।সিএনএন জানায়, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৮ সালে পিপলস লিবারেশন আর্মির নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেন। সেবছর এপ্রিল মাসে দেশটি সবচেয়ে বড় নৌ মহড়া করে। ওই মহড়ায় ৪৮টি নৌবহর, কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান ও ১০ হাজার সেনা অংশ নেয়।সেদিন প্রেসিডেন্ট শি বলেছিলেন, শক্তিশালী নৌবাহিনী তৈরির কাজটি বর্তমান বিশ্বে ভীষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।চীনের জাহাজ নির্মাণ প্রকৌশল এরই মধ্যে পৃথিবীতে সাড়া ফেলেছে। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট শি পিপলস লিবারেশন আর্মিকে বিশ্বমানের বাহিনীতে পরিণত করতে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেন। তিনি শিপইয়ার্ড ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে উদ্যোগ এখনও অব্যাহত আছে।ছবি: রয়টার্সসিএনএন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি’র ওই পরিকল্পনা কাজে লেগেছে। ২০১৫ তে কাজ শুরু করে এখন বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী চীনের। আকার বাড়ানোর পর এখন সামরিক প্রযুক্তি আধুনিকায়নের কাজ করছে দেশটি।ইউএস অফিস অব নেভাল ইন্টেলিজেন্স (ওএনআই) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে চীনা নৌবাহিনীর বহরে ২৫৫টি যুদ্ধজাহাজ ছিল। ২০২০ সালের শেষের দিকে জাহাজের সংখ্যা বেড়ে ৩৬০ এ দাঁড়িয়েছে। হিসাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীনের কাছে ৬০টি জাহাজ বেশি আছে। আগামী চার বছর পর, চীনের কাছে ৪০০টি যুদ্ধজাহাজ থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ওএনআই।ডিসেম্বরে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের নেভি, মেরিনস ও কোস্ট গার্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনের নৌবাহিনী মাত্র দুই দশকে তিন গুণের বেশি যুদ্ধজাহাজ বাড়িয়েছে।রিপোর্ট বলা হয়েছে, ‘ইতোমধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী চীনের। সাবমেরিন, এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, যুদ্ধবিমান, উভচর জাহাজ, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী সাবমেরিন এবং পোলার আইস ব্রেকার—উদ্বেগজনক গতিতে চীন নির্মাণ করে চলছে।’এর মধ্যে টাইপ ০৫৫ এর মতো বিধ্বংসী জাহাজ আছে। যাকে বিশ্লেষকরা বলেছেন মার্কিন টিকানডেরোগা-ক্লাস ক্রুজারের চাইতেও উন্নত। আবার উপকূল আক্রমণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি জাহাজের সাহায্যে চীন কাছাকাছি যেকোনো বিদেশি উপকূলে হাজার হাজার সেনা মোতায়েনের সক্ষমতাও অর্জন করেছে।ছবি: রয়টার্সধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে চীনের নৌবহরে ৪০০টি জাহাজ থাকবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের নৌবহরে ৩৫৫টি জাহাজ রাখার পরিকল্পনা।সিএনএন বলছে, বিশ্বে মার্কিন নৌবাহিনী শ্রেষ্ঠত্ব হারাতে বসেছে। তবে, এখনও সেনা সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নৌবাহিনীতে প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার সেনা আছেন। অন্যদিকে চীনের নৌবাহিনীতে আছে ২ লাখ ৫০ লাখ সেনা।
Leave a Reply