ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় ঝাড়ফুঁক আনতে গিয়ে খানকা শরীফের তত্বাবধায়কের ‘লালসার শিকার’ হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত মাওলানা সিরাজুল ইসলামকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
নবীনগর থানা পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত মাওলানা সিরাজুল ইসলাম হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বড়গাঁ গ্রামের মৃত আশিকুল ইসলামের ছেলে।
মামলা বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী বর্তমানে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার বয়স ২৫ ও দুই কন্যা সন্তানের জননী। আরও জানা যায়, গত দুই মাস আগে আবুল উলায়া খানকা শরীফে ওই নারী তার ৫ বছরের শিশু কন্যার জন্য তাবিজ আনতে গেলে দরজা বন্ধ করে দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মাওলানা সিরাজুল ইসলাম। পরে ভুক্তভোগী নারীকে হুমকি দেয়া হয় এই বিষয়ে কারও কাছে কিছু বললে কিংবা অভিযোগ করলে তার ও তার শিশুকে কুফরির মাধ্যমে বান মেরে হত্যা করা হবে। সে ভয়ে ধর্ষণের বিষয়টি এতদিন গোপনই রেখেছিলেন ওই নারী। কিন্তু ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরায় স্বামীর বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে যায়। পরে ওই নারী ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করলে স্থানীয় বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বৃহস্পতিবার বিকালে নবীনগর ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে বসে। পুলিশ খবর পেয়ে রাতে ওই ধর্ষক মাওলানা সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এই ব্যাপারে নবীনগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রহুল আমিন জানান, নবীনগর উপজেলার ভোলাচং গ্রামের ওই প্রবাসীর স্ত্রী ঝাড়ফুঁক আনতে শ্রীরামপুর গ্রামের আবু উলাইয়া খানকা শরীফ যান। এই খানকা আশপাশের গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী পুরুষ সমবেত হয়। সেখানকার তত্বাবধায়ক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মানুষজনকে নানান রোগের জন্য তাবিজ দিতেন এবং ঝাড়ফুঁক করতেন। ঝাড়ফুঁকের জন্য ওই প্রবাসীর স্ত্রীরও খানকা শরীফে আসা-যাওয়া ছিল।
তিনি আরও জানান, খানকা শরীফের তত্বাবধায়কের লালসার শিকার হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। স্থানীয়দের মধ্যে এমন কানাঘুষা শুরু হলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে সিরাজুলকে আটক করে। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর
তাকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।
এছাড়া ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জেনারেল
হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply