আবারও বড়দের বিবাদের বলি হলো শিশু লামিয়া। গাজীপুরে বাসাভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে ১০ বছরের লামিয়াকে গলা কেটে হত্যার পর পাশের ডোবায় ফেলে দেয় ভাড়াটিয়া। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, লামিয়ার যাতে খোঁজ না মেলে সেজন্য বিভ্রান্ত করারও চেষ্টা করে অভিযুক্ত সুমন। এ ঘটনায় ভাড়াটিয়া সুমনসহ ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এলাকাবাসী জানান, হত্যার পর শিশুটির মরদেহের ওপর দাঁড়িয়েছিলেন সুমন। তিন ভাইয়ের একমাত্র বোন লিমু মনি লামিয়া। পরিবারের সবচেয়ে আদরের সদস্যটিকে হারিয়ে বাড়িতে এখন শোকের মাতম। সন্তানহারা মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ থামছেই না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় লামিয়া। পরিবারের অভিযোগ পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং লামিয়ার অলঙ্কারের লোভেই ভাড়াটিয়া সুমন তাকে পাশের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে জবাই করে হত্যা করে পাশের ডোবায় ফেলে টয়লেটের স্ল্যাব দিয়ে চাপা দিয়ে রাখেন। এমনকি যখন সবাই হন্যে হয়ে লামিয়াকে খুঁজছিলো সেই স্ল্যাবের ওপরই দাঁড়িয়ে ছিলেন সুমন। শিশুটির বাবার দাবি, মাঝে মধ্যেই লামিয়াকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন সুমন। গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, শিশুটির হাতের আঙ্গুলে আংটি ছিল পায়ে নূপুর ছিল সেজন্য হতে পারে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে। এলাকাবাসী পুলিশকে জানায়, শিশুটিকে হত্যা করে পাশের ডোবায় ফেলে টয়লেটের স্ল্যাব দিয়ে চাপা দিয়ে তার মরদেহের ওপর দাঁড়িয়েছিলেন সুমন। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাজীপুরের পুলিশ সুপার জানান, হত্যার আগে লামিয়াকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লামিয়া স্থানীয় একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এর আগে পাশের একটি খাল থেকে গলা কাটা অবস্থায় লিমু আক্তার লামিয়া নামে ওই শিশু ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। স্বজনরা জানান, তিন মাস আগে বগুড়া সদর উপজেলার ফুলবাড়ির সুমন মিয়া ও তার স্ত্রী মিলি বেগম বাসা ভাড়া নেয়। পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া বাকি নিয়ে বাকবিতণ্ডাও হয় বাড়ির মালিকেরর সঙ্গে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন ও তার স্ত্রী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে লামিয়াকে গলা কেটে হত্যার পর পাশের খালে মরদেহ ফেলে দেন। পরিবারের লোকজন লামিয়ার নিখোঁজের বিষয়টি কালিয়াকৈর থানায় জানায়। পরে বাড়ি আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তারা। এ সময় বাড়ির পাশে খালে খুঁজতে নেমে অভিযুক্ত সুমন পানির নীচে লাশের উপর দাঁড়িয়ে বিভিন্ন দিকে খোঁজার পরামর্শ দেন এলাকাবাসীকে। পড়ে তাদের সন্দেহ হলে সুমনের কাছে গিয়ে তার পায়ের নীচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply