করোনা কিংবা সাধারণ ফ্লু সব রকম অসুখ থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসক ও গবেষকরা। করোনাভাইরাসের ঘন ঘন চরিত্র-বদলের দায়ে প্রতিষেধক ও ওষুধ দুই-ই এখন সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে রিস্ক একটু বেশিই। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ানো ও মাস্ক-সাবান-স্যানিটাইজার ব্যবহার করে অসুখের সঙ্গে লড়াই করা ছাড়া এই মুহূর্তে কোনও বিকল্প পথ নেই।
সুতরাং শরীরচর্চার পাশাপাশি শরীরকে শক্ত-সামর্থ্য করে তুলতে প্রতিদিনের খাবারে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবার। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ অন্তরা দেব দহিশের কিছু টিপস দেয়া হল-
* তেতো খাবার:
ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রতিদিন খাবারে তেতো খাবার রাখা জরুরি। হয় নিম পাতা, নয়তো উচ্ছে বা করলা। এ সবের অ্যান্টিভাইরাল উপাদান শরীরকে মজবুত রাখে ও এই সময় বাতাসে উড়ে বেড়ানো রোগজীবাণুর সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে।
* পর্যাপ্ত প্রোটিন:
প্রতিদিন খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিনও রাখা উচিত। মাছ, মাংস, সয়াবিন, মুসুর ডাল, ডিম এ সব থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে।
* লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদ:
ভারতীয় আয়ুষ মন্ত্রকের মতে, ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে গেলে ভারতীয় রান্নায় ব্যবহার করতে হবে আয়ুর্বেদ নির্দেশিত কিছু খাবার যা মশলাপাতি হিসেবে আমাদের দেশে চল আছে। তার মধ্যে লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদও রয়েছে। রান্নায় যোগ করুন লবঙ্গ ও দারচিনি। এদের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মহামারির বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। কাঁচা হলুদেরও অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল উপাদান শরীরকে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচায়।
* রসুন:
সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন এতেই নাকি ভ্যানিশ অর্ধেক রোগবালাই। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর এটি রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখে। কিছু ভাইরাস ও সংক্রমণজনিত অসুখ— যেমন ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ইত্যাদি প্রতিরোধে এটির ভূমিকা অনেক।
* সবুজ শাকসব্জি ও ফল:
ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচত ও শরীরকে স্বাভাবিক শক্তির জোগান দিতে ও ভিটামিন সি-খনিজের উপাদান যাতে ঘাটতি না পড়ে সে সবের দিকেও এই সময় নজর দিতে হবে। প্রতি দিন অন্তত ১০০ গ্রাম ওজনের যে কোনও ফল খান। সঙ্গে রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসব্জি।
* টক দই:
টক দইয়ের ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের জন্য ভীষণ উপযোগী। টক দইয়ের প্রো বায়োটিক উপাদান লিভারকে যেমন সুস্থ রাখে তেমনই এর জেরে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে দইয়ের জবাব নেই।
পানি:
শরীরে পানির ভাগ কমলে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তেমনই ডিহাইড্রেশন থেকে হওয়া নানা সমস্যায় জেরবার শরীর সহজেই ভাইরাসের শিকার হয়। তাই পানির বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। পানি শরীরের টক্সিন বের করে শরীরকে সুস্থ রাখে।
Leave a Reply