সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় বলা হচ্ছে, মানুষের রক্তের টাইপ বা গ্রুপের সঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির সম্পর্ক আছে। অর্থাৎ করোনা আক্রমণ করবে কি না- সেটা ঠিক করবে শরীরের রক্তের গ্রুপ। সূত্র : বিবিসি। গবেষকরা দেখছেন, ‘এ’ ‘বি’ বা ‘এবি’ টাইপ রক্তবিশিষ্ট লোকদের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত বা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এমনকি কভিড-১৯-এ কার মৃত্যুর ঝুঁকি কতটা- তার আভাস পেতেও সহায়ক হতে পারে রক্তের টাইপ। টুয়েন্টিথ্রিঅ্যান্ডমি নামে একটি জেনেটিক টেস্টিং কোম্পানির চালানো একটি গবেষণাতেও বলা হচ্ছে, যাদের রক্তের টাইপ ‘ও’ তাদের কভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা ‘এ’, ‘বি’ বা ‘এবি’ টাইপের রক্তের লোকদের চাইতে ৯ থেকে ১৮ শতাংশ কম। সাত লাখ ৫০ হাজার মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, টেস্টে কভিড পজিটিভ ফল পাওয়া গেছে- এমন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রক্তের টাইপ ‘ও’ এমন লোকের সংখ্যা সবচেয়ে কম। কভিড পজিটিভদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছেন ?‘এবি’ টাইপ রক্তের অধিকারীরা। এই গবেষকরা দেখেছেন. করোনাভাইরাসে আক্রান্তের বয়স, লিঙ্গ, ওজন, জাতিগত বা নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং আগে থেকে থাকা স্বাস্থ্য সমস্যা- এগুলো বিবেচনায় নেওয়ার পরও, কভিড সংক্রমণে ঝুঁকির ক্ষেত্রে রক্তের টাইপের ভূমিকা একই থাকছে। যাদের রক্তের টাইপ ‘এ’ তাদের অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মার্কিন দৈনিক দি নিউইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, মানুষের জিন, রক্তের টাইপ এবং কভিড-১৯ এগুলোর মধ্যে পরিসংখ্যানগত সম্পর্ক প্রথম চিহ্নিত করে ইউরোপের একটি জরিপ। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়, ইতালি ও স্পেনের ৭টি হাসপাতালের ১ হাজার ৯৮০ জন রোগীর ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এতে বলা হয়, ‘এ’ টাইপ রক্তের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি, এবং ‘ও’ টাইপের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম বলে দেখা গেছে। বলা হয়, যাদের রক্তের টাইপ ‘এ পজিটিভ’- তাদের কভিড-১৯ আক্রান্ত হলে অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটর দরকার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বেশি। এর আগে চীনে চালানো একটি জরিপেও এমন তথ্য পাওয়া গেছে। মেডআরকাইভ অনলাইন জার্নালে প্রকাশিত ওই জরিপে বলা হয়, উহান ও শেনঝেনের তিনটি হাসপাতালের ২ হাজার ১৭৩ জন করোনাভাইরাস রোগী এবং আক্রান্ত হয়নি- এমন লোকদের উপাত্ত তুলনা করে দেখা গেছে, ‘এ’ টাইপ রক্তের লোকদের কভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সেখানেও দেখা গেছে ‘ও’ টাইপ রক্তের মানুষদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম।
Leave a Reply