দেশের বাজারে এলো হুয়াওয়ের মাঝারি বাজাটের নতুন স্মার্টফোন ‘ওয়াই৭পি’। আর দশটা ফােনের সঙ্গে এর ফিচারে বেশ পার্থক্য রয়েছে, বিশেষ করে এর অ্যাপ সার্ভিসের ক্ষেত্রে। অপারেটিং সিস্টেম ও প্ল্যাটফর্ম অংশে বিষয়গুলাে আলোচনা করা হয়েছে।
বক্সের ভেতর কী কী আছে
-১০ ওয়াটের চার্জার
– মাইক্রাে ইউএসবি ক্যাবল
– মাঝারি মানের হেডফােন
– সিলিকন ব্যককভার
– সিম খোলার পিন
– ওয়ারেন্টি কার্ড ও ইউজার ম্যানুয়েল
এবং অবশ্যই মূল হ্যান্ডসেট।
ডিজাইন
ফোনটি বডি প্লাস্টিকে তৈরি। এর ব্যাক প্যানেলে গ্লাস ফিনিশিং ও ন্যানো টেক্সার টেকনোলজি ব্যবহার করায় ফোনটিকে দিয়েছে আলাদা লুক।
ব্যাক প্যানেলের বামে উপর-নিচ লাইনে রয়েছে ট্রিপল ক্যামেরা। ক্যামেরার ঠিক নিচেই রয়েছে ফ্ল্যাশ লাইট। প্যানেলের উপরের দিকে মাঝামাঝিতে রয়েছে ফিঙ্গারিপ্রন্ট সেন্সর বাটন।
ডিভাইসটির বাম দিকে রয়েছে হাইব্রিড ডুয়েল সিম ও ডেডিকেটেড মেমোরি স্লট। ডানে উপরের দিকে ভলিউম রকার, তার ঠিক নিচেই পাওয়ার বাটন।
একেবারে নিচের দিকে দেওয়া হয়েছে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক এবং স্পিকার।
ফোনে হুয়াওয়ে পাঞ্চহোল ডিসপ্লেতে উপরের বাম কোনায় দেওয়া হয়েছে সেলফি ক্যামেরা।
ডিসপ্লে
ডিসপ্লে ৬ দশমিক ৩৯ ইঞ্চির টিএফটি এলসিডি আইপিএস। স্ক্রিন টু বডি রেশিও ৯০.৫:৯। আর রেজুলেশন এইচডি প্লাস ১৫৬০ বাই ৭২০ পিক্সেল। পিপিআই ২৬৯।
ভিডিও-র মান চলনসই।
ক্যামরা
পিছনে রয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল এআই ক্যামেরা। এর মধ্যে মাঝেরটি ১.৮ অ্যাপারচারের ৪৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স, আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সের এফ২.৪ অ্যাপারচারের ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে নিচে। উপরের ক্যামেরায় রয়েছে এফ ২.৪ অ্যাপারচারের ২ মেগাপিক্সেলের ডেফথ সেন্সর।
সামনে পাঞ্চহোল ডিসপ্লেতে এফ ২.০ অ্যাপারচারের ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে।
ফোনটির উভয় ক্যামেরায় প্রতি সেকেন্ডে ৩০ ফ্রেমে ১০৮০ পিক্সেল রেজুলেশনের ভিডিও করা যাবে।
ক্যামেরায় প্রোট্রেইট, প্যানারোমা, মোভিং পিকচার, স্লো মোশন ভিডিও এবং টাইম ল্যাপসসহ বেশ কিছু ফিচার রয়েছে।
ফোনটির ক্যামেরায় তোলা ছবি ও ভিডিও-র মান চলনসই।
প্লাটফর্ম
হুয়াওয়ের নিজস্ব কিরিন ৭১০এফ চিপসেট দেওয়া হয়েছে ফোনটিতে। রয়েছে অক্টা কোর প্রসেসর। (4 x Cortex-A73 Based 2.2GHz + 4 x Cortex-A53 Based 1.7GHz)
জিপিইউ হিসেবে দেওয়া হয়েছে মালি জি৫১-এমপি৪।
অপারেটিং সিস্টেমে অ্যান্ড্রয়েড ৯ উপর বেইজ করে থাকছে হুয়াওয়ের নিজস্ব ইএমইউআই ৯.১। সঙ্গে হুয়াওয়ের মোবাইল সার্ভিস, প্লাস AOSP।
ফোনটিতে সরাসরি গুগলের সার্ভিস যেমন, গুগল প্লে স্টোর, ম্যাপ, ইউটিউব বা জিমেইল অ্যাপ নেই। তার বদলে আপনি পাবেন হুয়াওয়ে মোবাইল সার্ভিস ও হুয়াওয়ে অ্যাপ গ্যালারি।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশ অফিস থেকে জানিয়েছে, ফোনটিতে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম থাকছেই। বাড়তি সেবা হিসেবে থাকছে হুয়াওয়ের অ্যাপ গ্যালারি। যেখানে ৫৫ হাজারের বেশি অ্যাপ রয়েছে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় অ্যাপ নামিয়ে ব্যবহার করা যাবে।
আলাদাভাবে প্লে স্টোর, গুগল ম্যাপ বা গুগলের সব সার্ভিসও ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আমাদের রিভিউ করা ইউনিটটিতে প্লে স্টোর ইনস্টল করে নেওয়ায় ফোনটি ব্যবহারে গুগলের সেবাগুলাে পেতে তেমন কোনো ঝামেলা হয়নি।
ইউজার ইন্টারফেইসে বেশ কিছু স্পেশাল ফিচার আছে। এর মধ্যে স্মার্ট গ্যালারি সার্চিং, ডিজিটাল ক্যালেন্স, ফোন ক্লোন, ওয়ান হ্যান্ড মোড বেশ কাজের।
স্টোরেজ
ডিভাইসটিতে চার জিবি র্যাম দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্টোরেজ পাওয়া যাবে ৬৪ জিবি। মাইক্রোএসডি কার্ডে স্টোরেজ বাড়ানো যাবে ৫১২ জিবি পর্যন্ত।
পারফর্মেন্স
মাল্টি টাস্কিং স্মুথ বলা যায়। একসঙ্গে অনেকগুলো অ্যাপ চালালেও একদম ধীরগতির হবে না।
পাবজি, অ্যাসফাল্ট ৯ ইত্যাদি হাই-গ্রাফিক্স গেইম খেলার সময়ও ফোন অতিরিক্ত গরম হবে না। খেলার সময় ল্যাগও পাবেন না।
গেইম খেলেও ফোনটির ৪০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি ভালো পরিমাণ ব্যাকআপ দেয়। তবে ইউএসবি টাইপ সি চার্জার থাকলে চার্জিংয়ে আরও সুবিধা পাওয়া যেত।
সিকিউরিটি ফিচার:
ডিভাইসে ফিঙ্গারপ্রিন্টের পাশাপাশি রয়েছে ফেইস আনলক ফিচার। যাতে ব্যবহারকারীরা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাবেন।
সাউন্ড
সিঙ্গেল স্পিকার হলেও এর সাউন্ড কোয়ালিটি খারাপ না। রয়েছে হুয়াওয়ে হিস্টেন সাউন্ড ইফেক্ট, পাওয়া যাবে হেডসেট ব্যবহার করলেই।
কানেকশন:
টু, থ্রি ও ফোরজি সাপোর্ট করে ফোনটি। কানেকশন হিসেবে রয়েছে ব্লুটুথ ৫.১ প্রযুক্তি।
দাম
১৮ হাজার ৯৯৯ টাকা।
Leave a Reply