দিন দিন বেড়েই চলছে সর্বনাশা করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাস। নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে এক একটি দেশ। এক একটি অঞ্চল। বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে যা এখন চোখ রাঙ্গানী দিচ্ছে বাংলাদেশের উপর।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের যে ২৩টি জেলায় ভাইরাসটি তার অস্তিতের জানান দিয়েছে গাইবান্ধা জেলা তাদের মধ্যে একটি । যেখানে এখন পর্যন্ত ৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। হোম করেনটাইনে আছেন অনেকেই। ইতিমধ্যে গাইবান্ধা জেলাকে লক ডাউন ঘোষণা করা হলেও রাস্তাঘাটসহ হাট-বাজারগুলোতে মানুষের দিব্যি চলাচল।তরুনদের আড্ডা বসছে মতিঝিলের পাড়, গোবিন্দগঞ্জ সরকারী কলেজ মাঠসহ নানা স্থানে। প্রশাসনের দিক থেকে সর্তকর্তা, জরিমানা করলেও যেন থামানো যাচে্ছ না মানুষের অবাধে চলা ফেরা। লকডাউনের পরও সচেতন হচ্ছে না গোবিন্দগঞ্জের জনসাধারণ। দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা থাকলেও অনেক জায়গাতে শাটার অর্ধেক খোলা রেখে চলছে কেনা বেঁচা।প্রশাসনের গাড়ী কিংবা লোক দেখলে যা বন্ধ হয়ে যায়।
রংপুর মেডিকেলে স্থাপিত করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে গোবিন্দগঞ্জে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা ইতিমধ্যে উপজেলার নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন নিশ্চিত করেন।
আক্রান্ত ব্যক্তি কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে শালমারা ইউনিয়নের মিরাপাড়া গ্রামে আসেন। করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়া দুইদিন পূর্বে নমুনা সংগ্রহ করে রংপুরে পাঠানো হয়।
এর আগে করোনার উপসর্গ নিয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রিমা খাতুন (১১) নামের এক শিশুর মৃত্যু ঘটনাও প্রচার করা হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এতো কিছুর পরও যেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মানুষের মাঝে সচেতনতার বড্ড অভাব।
সরকার,স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যেমন সাহায্যের হাত বারিয়ে দিচ্ছেন অসহায় মানুষের প্রতি তেমনি গোবিন্দগঞ্জের নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এগিয়ে এসেছে এ বিপর্যয়ে। ঝিলপাড়া রয়েলস্ ক্লাব নামে একটি স্বোচ্ছাসেবী সংগঠন ইতিমধ্যে ১৫৫ টি পরিবারকে ৭দিনের খাবার প্রদান করেছে। ’দূরন্তপনায় দুর্বার’ নামে ফেসবুকে তারা অনুদান সংগ্রহের জন্য গ্রূপ খোলেন, যেখানে অনেকেই সহযোগীতার হাত বারিয়ে দেন।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৬ নাম্বার ওয়ার্ড কমিশনার রিমন তালুকদার বলেন,আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌছায়ে দিচ্ছি,মানুষদের ঘরে থাকার অনুরোধ করছি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করতে, কিন্তু কিছুতেই যেন মানুষ সচেতন হচ্ছে না। এখন মনে হচ্ছে উপর ওয়ালা গোবিন্দগঞ্জের মানুষের একমাত্র ভরসা।
বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হয় ৮ই মার্চ। সংখ্যায় ছিল তিন জন। মাত্র এক মাসে বর্তমানে রোগীর সংখ্যা তিন ঘরে গিয়ে দাড়িয়েছে । এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের চূড়ায় ওঠার সময় চলছে। ইংরজেীতে যাকে পিক টাইম বলা হয়।এসময়ে জনসাধারনকে সচেতন না করা গেলে ইউরোপ-আমেরিকার চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে।
Leave a Reply