পা কেটে কেটে নিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মিছিল ও পরে মোবারকের মৃত্যুতে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি এবং প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তার তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগে বহিষ্কার হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ মাস পলাতক থাকার পর গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে র্যাব-৯ এর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব-৯ এর বরাত দিয়ে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন জানান, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে র্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। রোববার রাতেই নবীনগর থানা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তারকৃত কবির চেয়ারম্যানকে শ্রীমঙ্গল থেকে নবীনগর থানায় নিয়ে আসেন। এর আগে গত ১২ এপ্রিল নবীনগর উপজেলার থানাকান্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও থানাকান্দি গ্রামের কাউসার মোল্লার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। থেমে থেমে চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে মোবারক মিয়া (৪৫) নামে এক রিকশা চালককে বাড়ি থেকে ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহ থেকে পা বিচ্ছিন্ন করে প্রতিপক্ষ। পরে তারা ‘বিচ্ছিন্ন পা’ হাতে নিয়ে ‘জয়বাংলা’ শ্লোগানে আনন্দ মিছিল করে। ওই মিছিল থেকে পায়ের বদলে মাথা কেটে নেওয়ার শ্লোগানও দেওয়া হয়। এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ৫০টি ঘর-বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলা-ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় অন্তত শতাধিক বাড়িতে। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোবারক। মোবারকের মৃত্যুর পর শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে নবীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান ও সাবেক কৃষক দল নেতা কবির আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়। গত ২৮ মে করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগে বীরগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। চার বছর আগে সংঘটিত বীরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সাবেক সেনা সদস্য বাহার হত্যা মামলারও প্রধান আসামি এই কবির চেয়ারম্যান। নবীনগর থানা সূত্র জানায়, মোবারকের পা কেটে নেওয়ার ঘটনার পরদিন ১৩ এপ্রিল পুলিশ অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও থানাকান্দি গ্রামের সর্দার আবু কাউসার মোল্লাসহ উভয়দলের ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করে। আরও পড়ুন: সংঘর্ষে পা কেটে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মিছিল! মারা গেলেন পা হারানো সেই মোবারক মিয়া পা কেটে নিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান: মোবারক হত্যার প্রধান সহযোগী গ্রেপ্তার
Leave a Reply