মহামারীর সময়ে নির্ভুল ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পরিবেশনের বিকল্প নেই। এতে গুজবের বিরুদ্ধে জনগণ সচেতন থাকেন এবং সরকারও মহামারী ঠেকাতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন।
মঙ্গলবার (৫ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) জার্নালিজম এন্ড ম্যাস কমিউনিকেশন বিভাগ জেএমসি) আয়োজিত “মহামারীর সময়ে অবাধ তথ্য প্রবাহ” শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
এতে বক্তারা মূলধারার গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ও অনবদ্য ভূমিকা এবং সে ভূমিকা পালনে সরকারের সহযোগিতার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন।
ওয়েবিনিয়ারে প্রধান আলোচক সাবেক প্রধান তথ্যকমিশনার অধ্যাপক ডঃ গোলাম রহমান বলেন, মহামারী মোকাবেলায় অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে হলে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যগত ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে সাংবিধানিকভাবে সংবাদমাধ্যমের যে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে, বাস্তবেতার প্রতিফলনও ঘটাতে হবে।
একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ বলেন, গনমাধ্যম করোনা বিষয়ক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন রাখতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। তবে মহামারী বিষয়ক সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে একটি জাতীয় কৌশল থাকা দরকার বলে তিনি মনে করেন, যাতে সঠিক সময়ে সঠিক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ও গুজব প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এ সময় যদি গুজব জয়ী হয়ে যায়, সাংবাদিকতা যদি পরাজিত হয়, তাহলে সমাজে বড় ধরনের বিশৃংখলা নেমে আসবে।“
ডিআইইউ জেনারেল এজুকেশনাল ডেভ্লপমেন্ট (জিইডি) বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান রাজু বলেন, মনঃস্তাত্বিকরা যদিও মানুষকে সংবাদ কম পড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন এ সময়ে, মানুষ কিন্তু ঝুঁকে আছে সংবাদের দিকে। তাই এ সময়ই সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব ও দায়িত্ব অনেক বেশি। “স্বাস্থ্যগত ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার এ মুহূর্তে সংবাদ মানুষের মানসিক শক্তি বাড়িয়ে তাদের উজ্জীবিত রাখতে পারে, যা প্রকান্তরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, “মানুষের এখন বাসায় দিন কাটছে খেয়ে-বসে এবং সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষণের উপর চোখ রেখে। বলা যায়, পেটের ক্ষুধা ও মনের ক্ষুধা মিটিয়েই কাটছে মানুষের সময়। তাই সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব এ সময় অনেক অনেক বেশি।
ডিআইইউ জেএমসি’র বিভাগীয় প্রধান ডঃ শেখ শফিউল ইসলাম সংবিধানে ঘোষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জাতিসংঘ মানবধিকার সনদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মহামারির সময়ে সংবাদে অতিরঞ্জন, মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব তৈরি পরিহারের উপর জোর দেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, রোগের মহামারীর সময় গুজবও মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে মূলধরার দায়িত্বশীল গণমাধ্যম গুজবের বিরুদ্ধে প্রতিষেধকের ভুমিকা পালন করে।
আলোচনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান শহিদুল হক, ঢাকারগ্রীন ইউনিভার্সিটির জেএমসি বিভাগের চেয়ারপারসন ডঃ অলিউর রহমান এবং ডিআইইউ জেএমসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডঃ তৌফিক-ই-এলাহিও আলোচনায় অংশ নেন। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন ডিআইইউ জেএমসি বিভাগের শিক্ষক এনায়েতুর রহমান।
Leave a Reply