বিশ্বের সেরা কয়েকটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যে ব্রান্ডের মধ্যে স্যামসাং অন্যতম। মাঝে মধ্যেই শীর্ষ স্থানে অবস্থান করে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৩৮ সালে লি বিয়ং চল-এর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তারই ছেলে লি কুন হি। রোববার (২৫ অক্টোবর) ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন এ স্বপ্নদ্রষ্টা।এক বিবৃতিতে স্যামসাং জানায়, মৃত্যুর সময় তার পাশে ছিলেন তার সন্তান ও স্যামসাংয়ের ভাইস চেয়ারম্যান লি জে-ইয়ং ও পরিবারের সদস্যরা। তার অবদান চিরদিন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে স্যামসাং পরিবার। স্যামসাংয়ের পাশাপাশি লি কুন হি নিজেও গড়ে উঠেছিলেন, খেতাব পেয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ধনীর।লি’র নেতৃত্বে স্মার্টফোন উৎপাদনে স্যামসাং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে এটি এত বড় হয়ে ওঠে যে, দক্ষিণ কোরিয়ার মোট দেশজ উৎপাদনের এক পঞ্চমাংশই ছিলো স্যামসাংয়ের অবদান। তার অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।“নতুন ব্যবস্থাপনার” সঙ্গে স্যামসাংকে ১৯৯৩ সালে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন লি কন-হি। স্যামসাং জানিয়েছে, তার ওই ব্যবস্থাপনাই “বৈশ্বিক সমাজকে এগিয়ে নিতে সেরা প্রযুক্তি সরবরাহের প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যকে উদ্বুদ্ধ করেছে”। পুরো দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জিডিপির এক পঞ্চমাংশই আসে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স থেকে।আইনি জটিলতার কবলেও পড়েছিলেন সদ্য প্রয়াত এ স্যামসাং চেয়ারম্যান। ১৯৯৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে ঘুষ প্রদানের অভিযোগ এসেছিল তার নামে। আর ২০০৮ সালে তোলা হয়েছিল কর ফাঁকি ও জালিয়াতির অভিযোগ।কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি অপরাধ থেকেই ক্ষমা পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় ক্ষমার সময় দক্ষিণ কোরিয়ার বিচার মন্ত্রী বলেছিলেন, “তিনি যাতে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিতে নিজ পদে ফিরতে পারেন এবং ২০১৮ সালে পিয়ংচ্যাংয়ে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিকের জন্য ভালো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেন” সে লক্ষ্যেই কাজটি করেছেন তারা।লি কন-হি স্যামসংয়ের প্রতিষ্ঠাতা লি বিয়ং চল এর তৃতীয় সন্তান। সে হিসেবে অনেক দিন ধরেই লি’র সন্তান লি জে-ইয়ং-কে স্যামসাং নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি নানাবিধ আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছেন। মাঝখানে দুর্নীতির দায়ে প্রায় এক বছর কারাদণ্ডও ভোগ করেছেন তিনি। তাই স্যামসাংয়ের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
Leave a Reply