রাজনৈতিক ও বাণিজ্যসহ নানা কারণে অনেকটা হুমকির মুখে ইন্টারনেট বিশ্বের ভবিষ্যত। সাম্প্রতিক সময় ইন্টারনেট বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অনলাইন মানবাধিকারকে সম্মান জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
ডিজিটাল যুগে সর্বস্তরের মানুষকে সংযুক্ত, সম্মানিত ও সুরক্ষিত করতে সহায়তার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের ক্রিয়াকলাপ কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়ে একগুচ্ছ সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন তিনি। সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের শতভাগ মানুষকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, সাইবার দুনিয়ার কোনো সীমানা নেই। আজকে আমি জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্র, ইন্ডাস্ট্রি অংশীদার ও সুশীল সমাজের প্রতি একটিই আহ্বান জানাতে চাই। সেটা হলো ডিজিটাল প্রযুক্তি ইস্যুতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ান। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব মানুষকে সংযুক্ত করার যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি, তা একমাত্র পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই সম্ভব। কাজেই অনলাইন মানবাধিকারের বিষয়টিকে সম্মান করুন এবং ডিজিটাল যুগের সম্ভাব্য বিপদ থেকে মানবসভ্যতাকে সুরক্ষা দিতে একসঙ্গে কাজ করুন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আরো বলেন, ডিজিটাল যুগ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সংজ্ঞায়িত হয়েছে। কাজেই বিশ্ব সম্প্রদায়কে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনের সুযোগ-সুবিধা সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে পৌঁছানো এবং সম্ভাব্য বৈশ্বিক ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি রুখতে হবে।জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইন্টরন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) তথ্যমতে, বৈশ্বিক জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বা ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ এখনো ইন্টারনেটের মতো অত্যাবশ্যকীয় সেবার আওতার বাইরে রয়েছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ এখনো ডিজিটাল যুগের সুযোগ-সুবিধায় অংশ নিতে পারছে না, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীরা ব্যাপকভাবে বৈষম্যের শিকার। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪৮ শতাংশ নারী ইন্টারনেট সেবার আওতায় এসেছে। একদিকে আরো বেশিসংখ্যক মানুষকে ডিজিটাল সেবায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে অগ্রগতি এসেছে। অন্যদিকে নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। একই সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভুল তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সাইবার হামলা ও ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া মানবাধিকার, গোপনীয়তা এবং তথ্য সুরক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply